স্থূলতা আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা লোপ করে, বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ এবং
মৃত্যুর হার বাড়িয়ে দেয়। ওবেসিটি বংশগত, পারিপার্শ্বিক এবং মানসিক অবস্থার
ওপরও নির্ভর করে। ওবেসিটি একটা অস্বাভাবিকতা যেখানে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট
হয়ে যায়। খাদ্য গ্রহণ করার ফলে যে শক্তি তৈরি হয় তা শরীরের শক্তি ক্ষয়ের
চেয়ে বেশি হয় এবং এই বেশি শক্তি (চর্বি) ট্রাইগ্লিসারাইড হিসেবে চর্বি কোষ,
টিস্যুতে জমা হয়। এই শক্তি তৈরি ও খরচ হওয়া নির্ভর করে স্নায়ু এবং হরমোনাল
স্বাভাবিক ভারসাম্যের ওপর।
স্থূলতা বা ওবেসিটি হচ্ছে বয়স, উচ্চতা লিঙ্গ অনুসারে শরীরের চর্বি বা ফ্যাট টিস্যু জমার আধিক্য। শরীরে খুব বেশি ফ্যাট বা চর্বি জমাকেই ওবেসিটি বলে।
ফ্যাট বা চর্বির ঘনত্ব নির্ণয় করা হয় বিভিন্নভাবে :
* বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) = BMI/ Weight in kg/Height in m2 (IRb/ˆ`N©¨)2
* এসএফটি চামড়ার ঘনত্ব (স্কিনফোল্ড থিকনেস), যাকে এনথ্রোপমেট্রিও বলে।
* এইচডব্লিউআর (হিপ ওয়েস্ট রেশিও)।
* পানির নিচে ওজন নেয়া।ওবেসিটি রোগ নির্ণয়ে বিএমআই ও এইচডব্লিউআর বেশি প্রচলিত। প্রাপ্তবয়স্ক পুুরুষ বা মহিলার সব ধরনের উচ্চতা ও ওজনের মধ্যে বিএমআই রেঞ্জ হল ১৯-২৬। একই বিএমআই হলেও মহিলাদের পুরুষদের চেয়ে শরীরে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। বিএমআই ৩০ হল স্থূলতার জন্য কাট অফ পয়েন্ট মহিলা ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই। যদি বিএমআই ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকে তাহলেও চিকিৎসাগতভাবে ধরে নিতে হবে মেদস্থূল এবং এটা তাৎপর্যপূর্ণ; এদের ওজন কমানোর এবং চিকিৎসা গ্রহণের জন্য বলতে হবে। অনেক বড় ধরনের ইপিডেমিওলজিক্যাল স্ট্যাডি করে দেখা গেছে, সব ধরনের মেটাবলিক ক্যান্সার, হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর অসুখের কারণে ভোগান্তি শুরু হয় এবং এগুলো বাড়তে থাকে বিএমআই ৩০-এর ওপরে গেলে।
স্থূলতা বা ওবেসিটির লক্ষণ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা : মেদস্থূল পুরুষ বা মহিলা ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে, মুখ হা করে ঘুমোতে থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বেশ জোরে শব্দ হয়।
হার্টবার্ন : মেদস্থূল রোগীদের বুক জ্বালাপোড়া করে গ্যাস্ট্রোএসোফেজিয়াল রিফ্যাক্সের কারণে। পাকস্থলী থেকে খাদ্যদ্রব্য, এসিড খাদ্যনালীতে চলে আসতে পারে, এ জন্য বুক জ্বালাপোড়া করে যাকে হার্টবার্ন বলে।
বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা : ওজন বেশি হওয়ার কারণে ওয়েট বিয়ারিং জয়েন্টে যেমন হাঁটু, কোমর, গোড়ালিতে ব্যথা হয়। এ ছাড়া এসব জয়েন্টে প্রদাহ হওয়ার জন্য, ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল জমা হওয়ার জন্য ব্যথা হতে পারে।
বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি ও জটিলতা : মেদস্থূলতার কারণে অন্যান্য রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়- যেমন ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, লিপিড অ্যাবনরমালিটিজ, ক্যান্সার ইত্যাদি। এসব রোগের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন উপসর্গও প্রকাশ পেতে পারে।কারণবংশগত সম্পৃক্ততা : একই পরিবারের বহু সদস্য আক্রান্ত হয় মনোজাইগোটিক টুইন (৭৪%), ডাইজাইগোটিক টুইন (৩২%) মেদস্থূল হওয়ার প্রবণতা বেশি হবে। একই পরিবেশে বসবাসরত, সদস্যদের মধ্যে কেউ মেদস্থূল আবার কেউ স্বাভাবিক। ওবেসিটি জিন শনাক্ত করা গেছে। লেপটিন ঙই মবহব-এর প্রডাক্ট। যেমন ইঁদুরের লেপটিন জিন মিউটেশান হয়, ফলে লেপটিন নিঃসরণ করে না তারা খুব স্থূল বা মোটা হয়। আবার লেপটিন বাইরে থেকে সরবরাহ করলে এরা শুকিয়ে যায়।অন্য সিনড্রোম, যা ওবেসিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত : উল্লেখযোগ্য হল প্রাডর উইলি সিনড্রোম এবং লরেন্স মুন বিডেল সিনড্রোম।
অন্যান্য স্পেসিফিক সিনড্রোম : কুশিং সিনড্রোম, হাইপোথায়রেডিজম ইনসুলিনোমা, ক্রানিয়োফারিনজিওমা ও হাইপোথালামাসের অন্যান্য ডিজঅর্ডারের সঙ্গে ওবেসিটি সম্পৃক্ত।যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর ওবেসিটি করে এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
* বেশি বেশি খাওয়া বা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করা। প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০০ ক্যালরি থেকে বছরে ১০ পাউণ্ড (৪.৫ কেজি) ওজন বাড়বে।
* বেশি চর্বিযুক্ত খাওয়া যা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করে, যদিও পরিমাণ মতো খাওয়া হয়।* খুব কায়িক পরিশ্রম বাদ দিয়ে (অল্প ক্যালরি ক্ষয় হবে) বেশি কায়িক পরিশ্রম করা, যাতে বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়।* দুশ্চিন্তা, অবসাদ, ক্লান্তি, ডিপ্রেশান বেশি খেতে উদ্বুদ্ধ করে- এগুলো যথাযথভাবে বর্জন করা, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
* মদপান (বিয়ার এবং কিছু পানীয় খুব বেশি ক্যালরি থাকে) পরিহার করা। মদপান করলে বেশি ক্যালরি শরীরে জমা হয়, তা সাধারণত চর্বি হিসেবে পেটে জমা হয়।* ওষুধ যেমন এন্টিডিপ্রেসেন্ট বা স্টেরয়েড সাধারণত ওজন বৃদ্ধি করে। একান্ত প্রয়োজন না হলে এগুলো গ্রহণ না করা।চিকিৎসা* আচার-আচরণ পরিবর্তন : দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস ইত্যাদি সম্পৃক্ততার কারণে ক্ষুধা বেশি হচ্ছে কি না বা খাওয়া বেশি হচ্ছে কি না এগুলো নির্ণয় করতে হবে। প্রয়োজনে ডায়েটিসিয়ান, সাইক্রিয়াট্রিস্ট এবং এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও খাওয়ার তালিকা ঠিক করে নিন।
* খাদ্য : খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন- কম ক্যালরি খাওয়া। উদ্দেশ্য হল খাবার থেকে যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি শরীরে প্রবেশ করছে তা যেন যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি ক্ষয় হয় তার চেয়ে কম হয়। এ জন্য বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট দেখে দৈনিক কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন ততটুকু খেতে হবে। চর্বিসমৃদ্ধ, পোলাও, কোর্মা, রোস্ট, ফাস্টফুড, থাই ফুড, চায়নিজ ফুড, পিৎজা, জুস, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়া সীমিত করতে হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি, তাজা ফলের রস খেতে হবে। ধূমপান, মদপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন।ষ শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম : প্রতিদিনই কিছু ব্যায়াম, বেশি হাঁটা, চলাফেরা ও কায়িক পরিশ্রম করার অভ্যাস করতে হবে। এতে যেমন ওজন কমবে, চর্বি পুড়ে যাবে এবং কতগুলো জটিল রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থাইটিসের প্রকোপ অনেকাংশে কমে আসবে। ব্যায়াম করলে শরীরের বাড়তি ক্যালরি ক্ষয় হয়ে যাবে। স্থূল হলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম আস্তে আস্তে শুরু করুন।
* ওষুধ : ওষুধ ব্যবহার করে স্থূলতা কমাতে চাইলে এর প্রধান জটিলতা হল ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করলে আবার স্থূলতা ফিরে আসে। ওষুধ ব্যবহার একটা মধ্যবর্তী পন্থা এবং অনেক ওষুধের কার্যকারিতায় এটা হতে পারে। ওষুধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এমফেটাফিন জাতীয় ওষুধ যেমন- ফেন্টারমিন যা অরুচি তৈরি করে খাদ্য গ্রহণ কমায় এবং স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। ছয় মাসে ৪.৪ কেজি থেকে ১০ কেজি ওজন কমতে পারে। এটা এককভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফল দেয়। তবে ২০ শতাংশ রোগীর পালমোনারি হাইপারটেনশান হতে পারে।সিবট্রোমিন কেন্দ্রীয়ভাবে নরইপিডেনফ্রিন এবং সিরোটিনিন আপটেক বন্ধ করে। দৈনিক কয়েকবার ব্যবহার করলে ৭ শতাংশ ওজন হ্রাস পেতে পারে। তবে এটা ব্যবহারে মানসিক অবসাদ হতে পারে। এটা কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায়। ওরলিসট্যাট আন্ত্রিক লাইপেজ ইনহিবিটার। ফ্যাট ম্যালআবসরবশন করে ওজন কমায় (প্রায় ৮.৭ কেজি কমে। শুধু ডায়েটিং করলে ৫.৮ কেজি কমে)। ২ বছর ব্যবহার করায় টাইপ-২ ডায়াবেটিকদের মেটফরফিন ওষুধ ব্যবহারে অরুচি হয় এবং ওজন কমে যায়।
সার্জারি : খুব বেশি স্থূলতা, বিএমআই ৪০-এর ওপরে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দেয়। পুরুষের ক্ষেত্রে ১২ ভাগ (২৫-৩৫ বছরের মধ্যে) এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬ ভাগ (৩৫-৪৫ বছরের মধ্যে)। এসব রোগীর ডায়েট, ব্যায়াম, ওষুধে কোনো কাজ হয় না। সার্জারির মধ্যে ভার্টিক্যাল ব্যান্ড গ্যাস্ট্রোপ্লাস্টি এবং রোক্স এনওয়াই গ্যাস্ট্রিক বাইপাস উল্লেখযোগ্য।
স্থূলতা বা ওবেসিটি হচ্ছে বয়স, উচ্চতা লিঙ্গ অনুসারে শরীরের চর্বি বা ফ্যাট টিস্যু জমার আধিক্য। শরীরে খুব বেশি ফ্যাট বা চর্বি জমাকেই ওবেসিটি বলে।
ফ্যাট বা চর্বির ঘনত্ব নির্ণয় করা হয় বিভিন্নভাবে :
* বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) = BMI/ Weight in kg/Height in m2 (IRb/ˆ`N©¨)2
* এসএফটি চামড়ার ঘনত্ব (স্কিনফোল্ড থিকনেস), যাকে এনথ্রোপমেট্রিও বলে।
* এইচডব্লিউআর (হিপ ওয়েস্ট রেশিও)।
* পানির নিচে ওজন নেয়া।ওবেসিটি রোগ নির্ণয়ে বিএমআই ও এইচডব্লিউআর বেশি প্রচলিত। প্রাপ্তবয়স্ক পুুরুষ বা মহিলার সব ধরনের উচ্চতা ও ওজনের মধ্যে বিএমআই রেঞ্জ হল ১৯-২৬। একই বিএমআই হলেও মহিলাদের পুরুষদের চেয়ে শরীরে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। বিএমআই ৩০ হল স্থূলতার জন্য কাট অফ পয়েন্ট মহিলা ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই। যদি বিএমআই ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকে তাহলেও চিকিৎসাগতভাবে ধরে নিতে হবে মেদস্থূল এবং এটা তাৎপর্যপূর্ণ; এদের ওজন কমানোর এবং চিকিৎসা গ্রহণের জন্য বলতে হবে। অনেক বড় ধরনের ইপিডেমিওলজিক্যাল স্ট্যাডি করে দেখা গেছে, সব ধরনের মেটাবলিক ক্যান্সার, হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর অসুখের কারণে ভোগান্তি শুরু হয় এবং এগুলো বাড়তে থাকে বিএমআই ৩০-এর ওপরে গেলে।
স্থূলতা বা ওবেসিটির লক্ষণ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা : মেদস্থূল পুরুষ বা মহিলা ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে, মুখ হা করে ঘুমোতে থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বেশ জোরে শব্দ হয়।
হার্টবার্ন : মেদস্থূল রোগীদের বুক জ্বালাপোড়া করে গ্যাস্ট্রোএসোফেজিয়াল রিফ্যাক্সের কারণে। পাকস্থলী থেকে খাদ্যদ্রব্য, এসিড খাদ্যনালীতে চলে আসতে পারে, এ জন্য বুক জ্বালাপোড়া করে যাকে হার্টবার্ন বলে।
বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা : ওজন বেশি হওয়ার কারণে ওয়েট বিয়ারিং জয়েন্টে যেমন হাঁটু, কোমর, গোড়ালিতে ব্যথা হয়। এ ছাড়া এসব জয়েন্টে প্রদাহ হওয়ার জন্য, ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল জমা হওয়ার জন্য ব্যথা হতে পারে।
বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি ও জটিলতা : মেদস্থূলতার কারণে অন্যান্য রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়- যেমন ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, লিপিড অ্যাবনরমালিটিজ, ক্যান্সার ইত্যাদি। এসব রোগের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন উপসর্গও প্রকাশ পেতে পারে।কারণবংশগত সম্পৃক্ততা : একই পরিবারের বহু সদস্য আক্রান্ত হয় মনোজাইগোটিক টুইন (৭৪%), ডাইজাইগোটিক টুইন (৩২%) মেদস্থূল হওয়ার প্রবণতা বেশি হবে। একই পরিবেশে বসবাসরত, সদস্যদের মধ্যে কেউ মেদস্থূল আবার কেউ স্বাভাবিক। ওবেসিটি জিন শনাক্ত করা গেছে। লেপটিন ঙই মবহব-এর প্রডাক্ট। যেমন ইঁদুরের লেপটিন জিন মিউটেশান হয়, ফলে লেপটিন নিঃসরণ করে না তারা খুব স্থূল বা মোটা হয়। আবার লেপটিন বাইরে থেকে সরবরাহ করলে এরা শুকিয়ে যায়।অন্য সিনড্রোম, যা ওবেসিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত : উল্লেখযোগ্য হল প্রাডর উইলি সিনড্রোম এবং লরেন্স মুন বিডেল সিনড্রোম।
অন্যান্য স্পেসিফিক সিনড্রোম : কুশিং সিনড্রোম, হাইপোথায়রেডিজম ইনসুলিনোমা, ক্রানিয়োফারিনজিওমা ও হাইপোথালামাসের অন্যান্য ডিজঅর্ডারের সঙ্গে ওবেসিটি সম্পৃক্ত।যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর ওবেসিটি করে এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
* বেশি বেশি খাওয়া বা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করা। প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০০ ক্যালরি থেকে বছরে ১০ পাউণ্ড (৪.৫ কেজি) ওজন বাড়বে।
* বেশি চর্বিযুক্ত খাওয়া যা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করে, যদিও পরিমাণ মতো খাওয়া হয়।* খুব কায়িক পরিশ্রম বাদ দিয়ে (অল্প ক্যালরি ক্ষয় হবে) বেশি কায়িক পরিশ্রম করা, যাতে বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়।* দুশ্চিন্তা, অবসাদ, ক্লান্তি, ডিপ্রেশান বেশি খেতে উদ্বুদ্ধ করে- এগুলো যথাযথভাবে বর্জন করা, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
* মদপান (বিয়ার এবং কিছু পানীয় খুব বেশি ক্যালরি থাকে) পরিহার করা। মদপান করলে বেশি ক্যালরি শরীরে জমা হয়, তা সাধারণত চর্বি হিসেবে পেটে জমা হয়।* ওষুধ যেমন এন্টিডিপ্রেসেন্ট বা স্টেরয়েড সাধারণত ওজন বৃদ্ধি করে। একান্ত প্রয়োজন না হলে এগুলো গ্রহণ না করা।চিকিৎসা* আচার-আচরণ পরিবর্তন : দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস ইত্যাদি সম্পৃক্ততার কারণে ক্ষুধা বেশি হচ্ছে কি না বা খাওয়া বেশি হচ্ছে কি না এগুলো নির্ণয় করতে হবে। প্রয়োজনে ডায়েটিসিয়ান, সাইক্রিয়াট্রিস্ট এবং এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও খাওয়ার তালিকা ঠিক করে নিন।
* খাদ্য : খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন- কম ক্যালরি খাওয়া। উদ্দেশ্য হল খাবার থেকে যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি শরীরে প্রবেশ করছে তা যেন যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি ক্ষয় হয় তার চেয়ে কম হয়। এ জন্য বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট দেখে দৈনিক কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন ততটুকু খেতে হবে। চর্বিসমৃদ্ধ, পোলাও, কোর্মা, রোস্ট, ফাস্টফুড, থাই ফুড, চায়নিজ ফুড, পিৎজা, জুস, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়া সীমিত করতে হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি, তাজা ফলের রস খেতে হবে। ধূমপান, মদপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন।ষ শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম : প্রতিদিনই কিছু ব্যায়াম, বেশি হাঁটা, চলাফেরা ও কায়িক পরিশ্রম করার অভ্যাস করতে হবে। এতে যেমন ওজন কমবে, চর্বি পুড়ে যাবে এবং কতগুলো জটিল রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থাইটিসের প্রকোপ অনেকাংশে কমে আসবে। ব্যায়াম করলে শরীরের বাড়তি ক্যালরি ক্ষয় হয়ে যাবে। স্থূল হলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম আস্তে আস্তে শুরু করুন।
* ওষুধ : ওষুধ ব্যবহার করে স্থূলতা কমাতে চাইলে এর প্রধান জটিলতা হল ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করলে আবার স্থূলতা ফিরে আসে। ওষুধ ব্যবহার একটা মধ্যবর্তী পন্থা এবং অনেক ওষুধের কার্যকারিতায় এটা হতে পারে। ওষুধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এমফেটাফিন জাতীয় ওষুধ যেমন- ফেন্টারমিন যা অরুচি তৈরি করে খাদ্য গ্রহণ কমায় এবং স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। ছয় মাসে ৪.৪ কেজি থেকে ১০ কেজি ওজন কমতে পারে। এটা এককভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফল দেয়। তবে ২০ শতাংশ রোগীর পালমোনারি হাইপারটেনশান হতে পারে।সিবট্রোমিন কেন্দ্রীয়ভাবে নরইপিডেনফ্রিন এবং সিরোটিনিন আপটেক বন্ধ করে। দৈনিক কয়েকবার ব্যবহার করলে ৭ শতাংশ ওজন হ্রাস পেতে পারে। তবে এটা ব্যবহারে মানসিক অবসাদ হতে পারে। এটা কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায়। ওরলিসট্যাট আন্ত্রিক লাইপেজ ইনহিবিটার। ফ্যাট ম্যালআবসরবশন করে ওজন কমায় (প্রায় ৮.৭ কেজি কমে। শুধু ডায়েটিং করলে ৫.৮ কেজি কমে)। ২ বছর ব্যবহার করায় টাইপ-২ ডায়াবেটিকদের মেটফরফিন ওষুধ ব্যবহারে অরুচি হয় এবং ওজন কমে যায়।
সার্জারি : খুব বেশি স্থূলতা, বিএমআই ৪০-এর ওপরে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দেয়। পুরুষের ক্ষেত্রে ১২ ভাগ (২৫-৩৫ বছরের মধ্যে) এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬ ভাগ (৩৫-৪৫ বছরের মধ্যে)। এসব রোগীর ডায়েট, ব্যায়াম, ওষুধে কোনো কাজ হয় না। সার্জারির মধ্যে ভার্টিক্যাল ব্যান্ড গ্যাস্ট্রোপ্লাস্টি এবং রোক্স এনওয়াই গ্যাস্ট্রিক বাইপাস উল্লেখযোগ্য।
0 comments:
Post a Comment